আন্তর্জাতিক ইনকামিং কলের টার্মিনেশন রেট বেআইনিভাবে পরিবর্তন করে আইজিডব্লিউ অপারেটরদের আর্থিক সুবিধা দেওয়ার অভিযোগে সরকার প্রায় ৯ হাজার ১০ কোটি ৭৪ লাখ টাকার রাজস্ব হারিয়েছে—এমন অভিযোগে বিটিআরসির সাবেক তিন চেয়ারম্যান এবং দুদকের সাবেক কমিশনারসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) দুদকের পরিচালক জালাল উদ্দীন আহমেদ বাদী হয়ে কমিশনের ঢাকা-১ কার্যালয়ে মামলাটি দায়ের করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম।
মামলার আসামিরা হলেন—
- মো. জহুরুল হক, সাবেক চেয়ারম্যান (বিটিআরসি) ও সাবেক কমিশনার (দুদক)
- সুনীল কান্তি বোস, সাবেক চেয়ারম্যান (বিটিআরসি)
- ড. শাহজাহান মাহমুদ, সাবেক চেয়ারম্যান (বিটিআরসি)
- ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) মো. আহসান হাবিব খান, সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান (বিটিআরসি)
- মো. রেজাউল কাদের, সাবেক কমিশনার (বিটিআরসি)
- মো. আমিনুল হাসান, সাবেক কমিশনার (বিটিআরসি)
এজাহারের অভিযোগ অনুযায়ী—
এক বছরের জন্য পরীক্ষামূলকভাবে প্রতি মিনিটে শূন্য দশমিক শূন্য ৩ মার্কিন ডলার টার্মিনেশন রেট নির্ধারিত থাকলেও বেআইনিভাবে তা বৃদ্ধি করে শূন্য দশমিক শূন্য ১৫ মার্কিন ডলার করা হয়। একইভাবে সরকার বা বিটিআরসির রেভিনিউ শেয়ারিং ৫১.৭৫% থেকে কমিয়ে ৪০% এবং আইজিডব্লিউ অপারেটরদের শেয়ারিং ১৩.২৫% থেকে বাড়িয়ে ২০% করা হয়।
এই পরীক্ষামূলক হার ২০১৫ সালের অক্টোবর থেকে ২০১৮ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত ২৮ মাস বেআইনিভাবে বহাল রাখা হয়।
এতে সরকারের যে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে বলে অভিযোগ—
- রেভিনিউ শেয়ারিং অনিয়মে ক্ষতি: ৩৮৩ কোটি ৭৩ লাখ ৮৩ হাজার টাকা
- কম রেটে কল আনায় ক্ষতি: ২,৯৪১ কোটি ৯৯ লাখ ৩৯ হাজার টাকা
- বৈদেশিক মুদ্রা দেশে না আনায় ক্ষতি: ৭২ কোটি ১০ লাখ ৯৯ হাজার ৬৯ মার্কিন ডলার
(বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৫,৬৮৫ কোটি ১ লাখ ২৪ হাজার টকা)
সব মিলিয়ে রাষ্ট্রের মোট আর্থিক ক্ষতি দাঁড়িয়েছে ৯ হাজার ১০ কোটি ৭৪ লাখ ৪৮ হাজার টাকা।
দুদক জানায়, আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ৪০৯/৪১৮ ধারা, ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২-এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মতামত জানান