গত বছরের আগস্টে বাংলাদেশে বন্যার তাণ্ডবে দেশের আট জেলাকে জলমগ্ন করে ফেলেছিল। সেই সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছিল তিন-চার বছর বয়সী এক শিশুর ছবি, যা প্রায় কাঁধ পর্যন্ত পানিতে ডুবে থাকা ভঙ্গিতে তোলা। ছবিটিতে শিশুটি সাদা-কালো রঙে ফুটে উঠেছিল। ফেসবুকে এটি শেয়ার করেছিলেন আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুল এবং নায়িকা পরিমনী।
ছবিটি ভাইরাল হবার পর অনেক ব্যবহারকারী শিশুটির পরিচয় ও সন্ধান জানতে চেয়েছিলেন। কিন্তু পরে দেখা যায়, হৃদয়বিদারক এই ছবি আসল নয়, বরং এআই বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে।
বিশ্বজুড়ে এআই প্রযুক্তির দ্রুত প্রসারের সঙ্গে এর ব্যবহার ও অপব্যবহারও বাড়ছে। অনেক দেশ ইতিমধ্যেই এআই নিয়ন্ত্রণ ও অপব্যবহার রোধে আইনি কাঠামো, নীতিমালা ও স্ট্র্যাটেজি প্রণয়ন করেছে। ফলে সেখানে এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করার সীমা এবং অপব্যবহার রোধের ব্যবস্থা রয়েছে।
তবে বাংলাদেশে এ পর্যন্ত কোনও সমন্বিত আইনি কাঠামো, নীতিমালা বা স্ট্র্যাটেজি নেই, যা এআই প্রযুক্তির সঠিক ব্যবস্থাপনা ও অপব্যবহার রোধের ক্ষেত্রে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ এবং আইনজীবীরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ এখনও পুরোপুরি প্রস্তুত নয়।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত বিশেষ সহকারী ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব বলেন, “আমরা একটি ন্যাশনাল এআই পলিসি তৈরির কাজ শুরু করেছি। এছাড়া আরও কয়েকটি পলিসির উপরও কাজ চলছে। এগুলো শেষ হলে আমরা ন্যাশনাল এআই পলিসির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট সব বিষয়কে সমাধান করতে পারব।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্য প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক বিএম মইনুল হোসেন বলেন, “জেনারেটিভ এআই আসার পর যেকোনও কণ্ঠ বা চেহারা নকল করা সম্ভব হচ্ছে। এটি শুধু বাংলাদেশের নয়, গোটা বিশ্বের জন্য উদ্বেগের বিষয়। সবচেয়ে বড় সমস্যা হলো এআই এর এথিক্যাল ব্যবহার, মিস-ইনফরমেশন এবং **প্রোপাগান্ডা ছড়ানোর সম্ভাবনা।”
অধ্যাপক হোসেন আরও বলেন, “শুধু এআই নীতি প্রণয়ন করলেই হবে না। এর পাশাপাশি ডেটা প্রোটেকশন অ্যাক্ট, ইনোভেশন ইনডেক্স, ইউজার বিজনেস নিয়মাবলী থাকা দরকার, না হলে এআই নীতি কার্যকর হবে না।”
মতামত জানান